আমরা করবো জয়

June 01, 2023

রিফাত নামের এক শিশুকে দেখলাম কনফিডেন্সের সাথে উত্তর দিচ্ছে। জাতীয় ফুলের নাম – ফুল। শিক্ষক বলছেন কী ফুল? সে আবারো গলার জোড় আরো এক স্কেল বাড়িয়ে বলছে – গাঙের ফুল। 
আমি রিফাতের দীপ্তিময় চোখের দিকে তাকিয়ে ঘুরে এলাম আমার স্কুল জীবনে। এক শিক্ষক আমাকে জিজ্ঞেস করছে 'জাতীয় ফুলের নাম কি?
আমি ভয়ে ভয়ে উত্তর দিয়েছিলাম – গোলাপ। 
আমার শিক্ষক আমাকে মারেননি কিন্তু খুব হেসেছিলেন। বলেছিলেন পরের দিন যেন পড়া শিখে আসি। 

এর কয়েক বছর পরে আমি আমার মেয়েকে স্কুলে দিলাম। সেও একদিন এই প্রশ্নের সম্মুখীন হলো। 
আমার মেয়ে উত্তর দিয়েছিল 'গাঁদা ফুল। কারণ আমি তখন ফুলের বাগান করি। শীত আসলেই বাগান ভরে যেতো গাঁদাফুল দিয়ে। গোলাপও ফুটুতো। কিন্তু গোলাপ গাছে ছিল কাঁটা। সে তার ছোট ছোট হাত দিয়ে গাঁদাফুল ছিড়তো, খেলতো। সবাইকে উপহার দিতো। আমি শেখানো সত্বেও সে তার প্রিয় ফুলের নামটিই শিক্ষককে বলল – এখানেই লেগে গেল গণ্ডগোল। শিক্ষক বিরক্ত হলেন। আমার কাছে চিঠি পাঠালেন, আমি যেন পরদিন স্কুলে আসি। 

আমি মেয়েকে হাজারবার জিজ্ঞেস করেও কারণ বলতে পারলো না। আমি স্কুলে যেতেই শিক্ষক আমাকে জানালেন – আমার বাচ্চা ক্লাসে মনোযোগী না। সে নিয়মিত পড়া করে আসে না।
এবং আমি অভিভাবক হিসেবে অযোগ্য। কারণ আমি বাচ্চার খেয়াল রাখি না। আমি ভয়ে লজ্জায় থরথর করে কেঁপে উঠলাম। তারপর কোনমতে জিজ্ঞেস করলাম – কোন প্রশ্নের উত্তর আমার মেয়ে দিতে পারেনি। জানার পরে অবাক হওয়া ছাড়া আমার কিছু করার ছিল না। 
সেদিন শুধু আমি না। আরো বেশ কয়েকজন মা বাবাকে টিচার ডেকেছিলেন। এবং তার প্রতিটি কারণ ছিল নিতান্ত তুচ্ছ। 

এরপরে একদিন আমার মেয়ে ভার্সিটিতে ভর্তি হলো। স্কুল কলেজের পরে ভার্সিটিতে যে আমার মেয়ের জন্য এমন অপমান লেখা আছে আমি জানতাম না। আমার মেয়ের একবার এসাইনমেন্ট তৈরি হলো না। বাড়িতে মেহমান পাশাপাশি তার অসুস্থতা। দুই মিলিয়ে সে দেরি করে ফেললো। 
এক স্বনামধন্য শিক্ষক আমার মেয়ের সমস্ত শিক্ষাদীক্ষা যে ' ভুল' এমনকি ভার্সিটিতে না এসে তার যে অশিক্ষিত থাকা উচিৎ ছিল জানাতে ভুললেন না।
আমার কথা কিন্তু কোন শিক্ষককে ছোট করার উদ্দেশ্যে না। আমি নিজেও পেয়েছি – আক্কাস স্যার, মিজানুর স্যার, অসীম স্যার, শিউলি আপা, ডেইজি আপা, রোকেয়া ম্যাডাম, রুখসানা ম্যাডামদের মতো শিক্ষক।
উনারা ক্লাসে পড়াতেন না পড়া হৃদয়ে গেঁথে দিতেন। উনারা ক্লাসে ঢুকতেন হাসতে হাসতে। যেন এইমাত্র কোন মজার কাণ্ড ঘটে গেছে। আর পেয়েছি 'মমতাজ ' আপাকে। তিনি যেন শুধু আমার শিক্ষকই ছিলেন না ছিলেন অভিভাবকও।

আজ রিফাতের বলার কনফিডেন্স দেখে আমি আবার আগের দিনে ফিরে গেছি। সেই শ্লেটে লেখার দিনে। যখন দুলে দুলে শিক্ষক যা বলতেন তাই আওড়াতাম। তখন যে সব ছড়া কবিতা, নামতা শিখেছি, আজও তা মূখস্ত আছে। 
আমি ধন্যবাদ জানাই রিফাতের শিক্ষককে। উনি যখন রিফাতের মজার উত্তর শুনে বললেন – 'সব্বনাশটা কইরালচে। '

উনি শেখাচ্ছেন হাসিমুখে। না বকে, শাস্তি না দিয়ে, অপমান না করে। তাই অকুণ্ঠ ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা তাকে না জানিয়ে পারছি না। একদিন রিফাত হয়তো অনেক বড় হবে। তার বড় হওয়ার পেছনে সে হয়তো মনে করবে তার মাদ্রাসা বা স্কুলের শিক্ষকদের অবদান। 

তাকরিমের মতো গোল্ড মেডেল নিয়ে স্যারের বাসায় যাবে। স্যারকে ডাকবে – স্যার, স্যার বাসায় আছেন? 
- কে? 
- আমি রিফাত। 
- কোন রিফাত? 
- জাতীয় ফুল গাঙের ফুল, বলা রিফাত।
- স্যার দেখেন আমি আপনার জন্য একটি উপহার এনেছি। 
- তারপর সেই সোনার পদক বা মেডেলটি স্যারের হাতে তুলে দেবে। 
- আমরা সেই সুন্দর দিনটির অপেক্ষায় রইলাম।

- #আমরা করবো জয়
- নিতু ইসলাম।


আমাকে ফেসবুক পেজেও ফলো করতে পারেন।

আলিঙ্গনের কাছে আজ বলিউড রোমান্সও ফেল!

June 01, 2023



আজ থেকে কয়েক মাস আগের ঘটনা। চোট পেয়ে ভারতীয় দলের বাইরে ছিলেন রবীন্দ্র জাদেজা। সেই সময় তার স্ত্রী রিভাবার হয়ে ভোটের প্রচারে রাস্তায় নেমে পড়েছিলেন জাড্ডু। তখন অনেক তির্যক মন্তব্য ভেসে এসেছিল জাদেজার উদ্দেশে। অনেকেই বলেছিলেন, চোট সারানোর নাম-গন্ধ নেই, ভোটের প্রচার করতে ব্যস্ত! আসলে এশিয়া কাপ ও T20 বিশ্বকাপের মতো মঞ্চে তাকে ছাড়া ভারতের খারাপ প্রদর্শনের জন্য অনেকেই ব্যথিত ছিলেন সেই সময়।

তারপর কেটে গেছে প্রায় চার-পাঁচ মাস। বাইশ গজে প্রত্যাবর্তন হয়েছে রবীন্দ্র জাদেজার। বর্ডার-গাভাসকর ট্রফিতে ব্যাটে-বলে দুর্দান্ত প্রদর্শন করে ভারতকে সিরিজ জিতিয়েছেন। আইপিএল ফাইনালে শেষ 2 বলে 10 রান করে চেন্নাইকেও জিতিয়েছেন। জাদেজা ফিরেছেন, রাজার বেশেই প্রত্যাবর্তন করেছেন এই রাজপুত।

জাদেজার ব্যাটে উইনিং শটটা আসার পর ক্যামেরায় ধরা পড়লেন রিভাবা। তার চোখে তখন আনন্দাশ্রু। মাঠে ঢুকে জড়িয়ে ধরলেন স্বামীকে। মুখে স্বস্তির হাসি। সেদিন ভোটের প্রচারে তার স্বামী তার পাশে ছিলেন, তার জয়ের সাক্ষী ছিলেন। স্বামীর এই জয়ের দিনে প্রাণভরে তাকে আপন করে নিলেন রিভাবা। রবীন্দ্র-রিভাবার আলিঙ্গনের কাছে আজ বলিউড রোমান্সও ফেল! ❤️


৫ মিনিটে মাত্র ৫টি গল্প যা আপনার দৃষ্টিভঙ্গি পাল্টে দেবে!

June 01, 2023
৫ মিনিটে মাত্র ৫টি গল্প যা আপনার দৃষ্টিভঙ্গি পাল্টে দেবে!

ছোট হয়ে আসছে পৃথিবী, সেই সঙ্গে বাড়ছে সময়ের মূল্য। মানুষ চায় অল্প সময়ে বেশি পেতে। আর এসব কথা ভেবেই eআরকি খুবই অল্প সময়ে প্রশিক্ষণ কোর্সের আয়োজন করেছে। আমাদের আজকের বিষয় ম্যানেজমেন্ট বা ব্যবস্থাপনা। এ কোর্সে আপনাকে মাত্র পাঁচ মিনিটে বাস্তব উদাহরণের মাধ্যমে ম্যানেজমেন্টের মূল বিষয় সম্পর্কে শিক্ষা দেওয়া হবে।
.
গল্প-১

বাবা গোসলে, মা রান্না ঘরে আর ছেলে টিভি দেখছিল। এমন সময় দরজায় ঘণ্টা বাজল। ছেলে দৌড়ে গিয়ে দরজা খুলে দেখল, পাশের বাসার করিম সাহেব দাঁড়িয়ে। ছেলে কিছু বলার আগেই করিম সাহেব বললেন, ‘আমি তোমাকে ৫০০ টাকা দেব, যদি তুমি ১০ বার কান ধরে উঠবস কর।’ বুদ্ধিমান ছেলে অল্প কিছুক্ষণ চিন্তা করেই কান ধরে উঠবস শুরু করল, প্রতিবার উঠবসে ৫০ টাকা বলে কথা। শেষ হতেই করিম সাহেব ৫০০ টাকার নোট ছেলের হাতে ধরিয়ে দিয়ে চলে গেলেন। বাবা বাথরুম থেকে বের হয়ে জিজ্ঞেস করলেন, ‘কে ছিল দরজায়?’ ‘পাশের বাসার করিম সাহেব’, উত্তর দিল ছেলে। ‘ও’, বললেন বাবা, ‘আমার ৫০০ টাকা কি দিয়ে গেছেন?’
শিক্ষণীয় বিষয়
আপনার ধারদেনার তথ্য শেয়ারহোল্ডারদের থেকে গোপন করবেন না। এতে অনেক অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা থেকে রক্ষা পাবেন।
গল্প-২

সেলসম্যান, অফিস ক্লার্ক ও ম্যানেজার দুপুরে খেতে যাচ্ছিলেন। পথে তাঁরা একটি পুরোনো প্রদীপ পেলেন। তাঁরা ওটাতে ঘষা দিতেই দৈত্য বের হয়ে এল। দৈত্য বলল, ‘আমি তোমাদের একটি করে ইচ্ছা পূরণ করব।’ ‘আমি আগে! আমি আগে!’ বললেন অফিস ক্লার্ক, ‘আমি বাহামা সমুদ্রপারে যেতে চাই, যেখানে অন্য কোনো ভাবনা থাকবে না, কাজ থাকবে না।’ ‘ফুঃ...!!’ তিনি চলে গেলেন। ‘এরপর আমি! এরপর আমি!’ বললেন সেলসম্যান, ‘আমি মায়ামি বিচে যেতে চাই যেখানে শুধু আরাম করব।’ ‘ফুঃ...!!’ তিনিও চলে গেলেন। ‘এখন তোমার পালা’, দৈত্য ম্যানেজারকে বলল। ম্যানেজার বললেন, ‘আমি ওই দুজনকে আমার অফিসে দেখতে চাই।’
শিক্ষণীয় বিষয়
সব সময় বসকে আগে কথা বলতে দেবেন। তা না হলে নিজের কথার কোন মূল্য থাকবে না।
গল্প-৩

একটি ইগল গাছের ডালে বসে আরাম করছিল। এমন সময় একটি ছোট খরগোশ ইগলটিকে দেখে জিজ্ঞেস করল, ‘আমিও কি তোমার মতো কিছু না করে এভাবে বসে আরাম করতে পারি?’ ইগল উত্তর দিল, ‘অবশ্যই, কেন পারবে না।’ তারপর খরগোশটি মাটিতে এক জায়গায় বসে আরাম করতে থাকল। হঠাত্ একটি শিয়াল এসে হাজির, আর লাফ দিয়ে খরগোশকে ধরে খেয়ে ফেলল।
শিক্ষণীয় বিষয়
যদি কোনো কাজ না করে বসে বসে আরাম করতে চান, তাহলে আপনাকে অনেক ওপরে থাকতে হবে।
গল্প-৪

একটি মুরগি ও একটি ষাঁড় আলাপ করছিল। ‘আমার খুব শখ ওই গাছের আগায় উঠব, কিন্তু আমার এত শক্তি নেই’, মুরগিটি আফসোস করল। 'উত্তরে ষাঁড়টি বলল, ‘আচ্ছা, তুমি আমার গোবর খেয়ে দেখতে পার, এতে অনেক পুষ্টি আছে।’ কথামতো মুরগি পেট পুরে গোবর খেয়ে নিল এবং আসলেই দেখল সে বেশ শক্তি পাচ্ছে। চেষ্টা করে সে গাছের নিচের শাখায় উঠে পড়ল।।দ্বিতীয় দিন আবার খেল, সে তখন এর ওপরের শাখায় উঠে গেল। অবশেষে চার দিন পর মুরগিটি গাছের আগায় উঠতে সক্ষম হলো। কিন্তু খামারের মালিক যখন দেখলেন মুরগি গাছের আগায়, সঙ্গে সঙ্গে তিনি গুলি করে তাকে গাছ থেকে নামালেন।
শিক্ষণীয় বিষয়
ফাঁকা বুলি (বুল শিট) হয়তো আপনাকে অনেক ওপরে নিয়ে যেতে পারে, কিন্তু আপনি বেশিক্ষণ ওখানে টিকে থাকতে পারবেন না।
গল্প-৫

একটি পাখি শীতের জন্য দক্ষিণ দিকে যাচ্ছিল। কিন্তু এত ঠান্ডা ছিল যে পাখিটি শীতে জমে যাচ্ছিল এবং সে একটি বড় মাঠে এসে পড়ল। যখন সে মাঠে পড়ে ছিল, একটি গরু তার অবস্থা দেখে তাকে গোবর দিয়ে ঢেকে দিল। কিছুক্ষণ পর পাখিটি বেশ উষ্ণ অনুভব করল। যখন গোবরের গরমে সে খুব ঝরঝরে হয়ে উঠল, আনন্দে গান গেয়ে উঠল। এমন সময় একটি বিড়াল পাশ দিয়ে যাচ্ছিল, পাখির গান শুনে খুঁজতে লাগল কোথা থেকে শব্দ আসে। একটু পরই সে গোবরের কাছে আসে এবং সঙ্গে সঙ্গে গোবর খুঁড়ে পাখিটিকে বের করে তার আহার সারে।
শিক্ষণীয় বিষয়
১. যারা আপনার ওপর কাদা ছোড়ে, তারা সবাই-ই আপনার শত্রু নয়।
২. যারা আপনাকে পঙ্কিলতা থেকে বের করে আনে, তারা সবাই-ই আপনার বন্ধু নয়।
৩. এবং যখন আপনি গভীর পঙ্কিলতায় নিমজ্জিত, তখন মুখ বেশি না খোলাই শ্রেয়।


ছোট গল্প

June 01, 2023
আমাদের সাথে ফেসবুকেও জয়েন হতে পারেন FACEBOOK PAGE




         ছোট গল্প





নতুন বিয়ে করা স্ত্রীর সাথে ড্রইং রুমের সোফায় বসে টিভি দেখছিলাম। আর সোফার পাশে মেঝেতে বসে টিভি দেখছিলো দশ এগারো বছরের কাজের মেয়েটি। ওর নাম শেফালি। দরিদ্র ঘরের মেয়ে। বাবা নেই। মা আছে। আমাদের গ্রামে ওদের বাড়ি। সেই সূত্রেই আমাদের চেনে। ওর মা একদিন মেয়েকে নিয়ে গ্রাম থেকে আমাদের বাড়িতে এসে আমার মাকে বললো, মেয়েটিকে যেনো আমরা রেখে দিই। আমাদের এখানে থাকবে, কাজ করবে। মা রেখে দিলেন। তারপর থেকে মেয়েটি আমাদের বাড়িতে থাকে। মাঝে মাঝে ওর মা এসে মেয়েকে দেখে যায়।

  আমার স্ত্রী মেয়েটির দিকে তাকিয়ে বললো,"তুমি নিচে কেনো বসেছো? সোফায় বসো।"
  
  মেয়েটি আমাদের এখানে আছে দু বছর হলো। সে সব সময় নিচে বসে টিভি দেখে। তাকে কখনো আমরা সোফায় বসে টিভি দেখার কথা বলি নি। 

  মেয়েটি তাই অবাক এবং কিছুটা ভয় নিয়ে আমাদের দিকে তাকালো। সে বুঝতে পারছে না কী করবে?

  স্ত্রী তখন উঠে গিয়ে মেয়েটির হাত ধরে দাঁড় করিয়ে সোফায় বসালো। 
  এবং হেসে বললো,"এখন থেকে সোফায় বসে টিভি দেখবে। কখনো নিচে বসবে না।"

  মেয়েটি জড়োসড়ো হয়ে বসে টিভি দেখতে লাগলো।

  কিছুটা দূর থেকে মা দৃশ্যটি দেখলেন। 
  পরে মা আমাকে তার রুমে ডেকে বললেন,"আমাদের সৌভাগ্য যে, আমরা খুব ভালো একটা বউ পেয়েছি।"
  আর বাবা বললেন,"বউটার যত্ন নিবি। আমি নিশ্চিত এই মেয়ে আমাদের জীবন বদলে দেবে। ঠিক যেমন তোর মা আমাদের জীবন বদলে দিয়েছিলো।"

  বাবার কথা অক্ষরে অক্ষরে মিলে গেলো। শহরের আমাদের এক খণ্ড জমি নিয়ে বারো বছর ধরে মামলা চলছিলো। জমিটির বর্তমান মূল্য প্রায় এক কোটি টাকা। জমিটি এক প্রভাবশালী লোক জোর করে দখল করে রেখেছিলো। কিছুদিন পর ঐ মামলার রায় হলো। এবং আমরা জিতলাম।

  বাবা সেদিন আদালত কক্ষে আমাকে আবারো বললেন,"বউটার যত্ন নিবি।"

  কিন্তু বাবার কথা শেষ পর্যন্ত রাখতে পারলাম না। 
  একদিন রান্নায় লবণ একটু বেশি হয়েছিলো বলে গলা চড়িয়ে স্ত্রীকে বললাম,"কী রেঁধেছো এসব! মুখেই তো দেয়া যাচ্ছে না।"
  আরো বেশ কিছু কথা বললাম। 

  বাবা তখন ছুটে এসে ধমকে আমাকে বললেন,"ঐ খাবার তো আমরাও খেয়েছি। কই আমাদের তো সমস্যা হয় নি।"

  আর মা বললেন,"কথা ভদ্র ভাবে বলবি। বেয়াদবের মতো কথা সহ্য করবো না।"

  আমি আর কিছু না বলে বড়ো বড়ো কদম ফেলে ডাইনিং রুম থেকে বেরিয়ে গেলাম। 

  পরদিন অফিসে গিয়ে জানলাম, বড়ো অংকের টাকার হিসেব গণ্ডগোল হয়েছে। আর অফিসের টাকার দায়িত্ব যেহেতু আমার, তাই দোষটা আমার ওপর পড়লো।

  বস আমাকে শান্ত গলায় বললেন, টাকার হিসেব যদি না মেলে তাহলে পুলিশকে জানাবেন এবং চাকরিও যাবে। 

  শুনে মনটা ভীষণ খারাপ হয়ে গেলো। পুরো অফিস তন্নতন্ন করে খুঁজেও ঐ টাকাগুলোর সন্ধান পেলাম না। অফিসের বাইরে অন্য কোথাও রেখেছি কিনা তাও মনে পড়লো না। দু:সংবাদের এখানেই শেষ নয়। সেদিনই জানতে পারলাম, ঐ প্রভাবশালী লোক, যে আমাদের জমি দখল করে রেখেছিলো, উচ্চ আদালতে রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করেছে। তার মানে, আবারো দীর্ঘদিন ধরে মামলা চলবে। অর্থাৎ আরো খাটুনি এবং টাকা খরচ হবে। 

  বিধ্বস্ত মনে বাড়ি ফিরলাম। বাড়ি ফিরে প্রথম যে কাজটা করলাম, তা হলো, স্ত্রীর কাছে ক্ষমা চাইলাম।
  সেই সাথে বললাম,"জীবনে আর কখনো তোমার সাথে বাজে আচরণ করবো না। কথা দিচ্ছি।"

  স্ত্রী কিছুক্ষণ চুপ থেকে বললো,"শেফালিকে স্কুলে ভর্তি করাতে চাই। আমি নিজে ওকে পড়াবো।"

  অপ্রত্যাশিত কথাটা শুনে খানিক সময় ওর দিকে চেয়ে রইলাম। 
  তারপর বললাম,"তাহলে ঘরের কাজ করবে কে?"
  "আমি শুনেছি ওর মা গ্রামে মানুষের বাড়িতে কাজ করে কোনো রকমে বেঁচে আছেন। তুমি তাকে এখানে নিয়ে আসো। উনি আমাদের বাড়িতে কাজ করবেন। আর মা মেয়ে এক সাথে থাকলে তাদেরও ভালো লাগবে।"

  তৎক্ষনাৎ রাজি হয়ে গেলাম। এবং বাবা মাকে বলাতে তারাও রাজি হয়ে গেলেন।

  তারপরের ঘটনা অবিশ্বাস্য! অফিসের টাকাগুলো অফিসেরই এক ড্রয়ারে খুঁজে পেলাম। অথচ সেদিন এতো খোঁজার পরও কেনো পাই নি কে জানে! আর দ্বিতীয় অবিশ্বাস্য ঘটনা হলো, ঐ প্রভাবশালী লোকটি আচমকা মামলা তুলে নিলো। লোকটির হঠাৎ এই মন পরিবর্তনের কারণ হলো, লোকটির একমাত্র ছেলের শরীরে ক্যান্সার ধরা পড়েছিলো। 

  সেদিন দু হাত ভর্তি মিষ্টি নিয়ে যখন বাড়ি ফিরলাম তখন বাবা পুনরায় আমাকে বললেন,"বউটার যত্ন নিবি।"
  বাবাকে তখন বললাম,"আপনি সব সময় বউয়ের যত্নের কথা কেনো বলেন?"
   বাবা উত্তরে বললেন,"একটা মেয়ে যখন বাবা মা'র বাড়ি ছেড়ে অচেনা এক বাড়িতে আসে, তখন আল্লাহ ঐ মেয়েটার মধ্যে সৌভাগ্য দিয়ে পাঠান। যারা ঐ সৌভাগ্যের যত্ন নেয়, তাদের জীবন আলোতে ভরে ওঠে। আর যারা অযত্ন করে, তাদের জীবন ভেঙে চুরমার হয়ে যায়। এটা আমার মুখের কথা নয়। নবীজীর কথা। নবীজী বলেছেন, মেয়েরা হলো বরকত এবং কল্যাণের প্রতীক।"

  আমি তখন বুঝতে পারলাম, বাবা কেনো কোনোদিন মায়ের সাথে খারাপ আচরণ করেন নি। আর সেজন্যই হয়তো শূন্য হাতে জীবন শুরু করে আজ উপরে উঠে এসেছেন। 

  স্টাডি রুমে স্ত্রী তখন শেফালিকে পড়াচ্ছিলো। মেয়েটা পড়াশোনায় ভালো করছে। আমি দরোজায় দাঁড়িয়ে স্ত্রীর দিকে তাকালাম। সে আমাকে দেখে হাসলো। তখন আমার মনে হলো, চাকরি এবং কোটি টাকার সম্পত্তি পেয়ে যে আনন্দ পেয়েছি, তারচেয়ে অনেক বেশি আনন্দ পেলাম স্ত্রীর হাসি মুখ দেখে। 

"সৌভাগ্য"
-


boAt Airdopes: এত কম দামে ইয়ারবাড! দেখে নিন কোনটা আপনার পছন্দ

May 11, 2023
YouTube


ক্রমশ গ্যাজেটের প্রতি অনুরক্ত হয়ে পড়ছে মানুষ। শুধু মোবাইল ফোন নয়, পাশাপাশি বাড়ছে নানা ধরনের অ্যাকসেসারির চাহিদা। স্মার্ট হচ্ছে সমস্ত প্রকরণ।

ইয়ারবাড ব্যবহারের প্রবণতা খুব দ্রুত বেড়েছে। শুধু গান শোনা বা কথা বলার সুবিধাই নয়, ইয়ারবাড এখন স্টাইল স্টেটমেন্ট। বিশেষত যুব সম্প্রদায় নানা আধুনিক ইয়ারবাড ব্যবহার করে স্টাইল সিম্বল হিসেবে। স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীদের মধ্যে ব্যাপক উৎসাহ লক্ষ্য করা যাচ্ছে।

বাজারে নানা রেঞ্জের ইয়ারবাড পাওয়া যায়। তবে যেহেতু যুব সম্প্রদায়ের মধ্যে এর চাহিদা সব থেকে বেশি তাই খুব দামি ডিভাইস কিনতে পারেন না অনেকেই। কিন্তু বহু সংস্থার ইয়ারবাডই রয়েছে সাধ্যের মধ্যে। এমন কিছু ইয়ারবাডের কথা জেনে নেওয়া যাক যার দাম ১৫০০ টাকার কম। BoAt-এর Airdopes এমনই একটি ইয়ারবাড।


এটি boat-এর একটি সম্পূর্ণ ওয়্যারলেস ইয়ারবাড। এর শব্দের মান খুবই ভাল। boAt Airdopes Atom 81 ওজনে দারুন হালকা এবং কমপ্যাক্ট ডিজাইন। ৫০ ঘণ্টা পর্যন্ত প্লেটাইম, কোয়াড মিক্স ENx টেক, ১৩ মিমি ড্রাইভার, বিস্ট মোড-সহ এটি দারুন একটি ইয়ারবাডে। Amazon-এ এর দাম ১,১৯৯ টাকা




FOLLOW @ INSTAGRAM

About Us

Recent

Random